পছন্দের সেরা ৫ টি বাঙালি ট্র্যাডিশনাল শাড়ি

বাঙালি নারীদের পছন্দের পোশাক গুলির মধ্যে অন্যতম হলো শাড়ি। বিয়েবাড়ি, স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে পুজো-পার্বণ, অনুষ্ঠান বা ঘরোয়া কোন প্রোগ্রাম - প্রতিটি অনুষ্ঠানে শাড়ি থাকবেই। কেউ পছন্দ করে সুতির শাড়ি কেউ বা জামদানি, কারোর আবার তাঁত ছাড়া চলে না। তাই আজকের আমার এই প্রতিবেদনটি লেখা কয়েকটি জনপ্রিয় Traditional Bengali Saree নিয়ে। যেগুলো প্রায় প্রত্যেক বাঙালি নারীদেরই খুব পছন্দের। তাহলে আর দেরি না করে আসুন দেখে নেওয়া যাক বাংলার সেরা ট্র্যাডিশনাল শাড়ি কোনগুলি -

১। তাঁতের শাড়ি (Tant Saree)


বাঙালি নারীদের পছন্দের শাড়ির মধ্যে প্রথম দিকেই তাঁতের শাড়ির নাম থাকে। এই শাড়ি বাংলার আবহাওয়া সংস্কৃতির সঙ্গে একেবারে মানানসই। বাঙালি নারীর সঙ্গে তাঁতের শাড়ির সম্পর্ক আজকের নয় বহু দিনের। এ শাড়িতেই যেন ফুটে ওঠে বাঙালি নারীর চিরায়ত রূপ। এর নকশাতেও থাকে স্থানীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া। পাড়ের নকশাই বলুন কিংবা শাড়ির জমির বুটি, ফুল পাতা কলকা ডিজাইনের সবটাই একান্তভাবে বাংলার নিজস্ব। তাঁতের শাড়ি সারা বছর পরা যেতে পারে। তাঁতের শাড়ির পাড়েই সমস্ত আকর্ষণ। মোটা বা চিকন যে কোনো পাড়ের তাঁতের শাড়িই সব সময় ব্যবহারের জন্য বেস্ট অপশন। কিন্তু গরমকালে তাঁতের শাড়ি হলো সবচেয়ে আরামদায়ক। গরমকালে অতিরিক্ত ঘাম হয় তাই এমন জাতীয় পোশাক পরা ভালো যেগুলো ঘাম শুষে নিতে পারে।

২। জামদানি শাড়ি (Jamdani Saree)


বাংলার শাড়ি প্রেমী নারীদের পছন্দের তালিকায় অন্যতম হলো ঢাকাই জামদানি শাড়ি। যা বোনা হয় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় তাই এর নাম ঢাকাই জামদানি। জামদানি শাড়ি হাতে বোনা হয় তাই এই শাড়ির ডিজাইন হয় খুব সূক্ষ্ম, নিখুঁত এবং মসৃণ। প্রতিটি সুতো কারিগরেরা হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বুনন করেন। যত সূক্ষ্ম সুতোর কাজ, তত দামি জামদানি! ঢাকাই ছাড়াও আরো তিন রকমের জামদানি পাওয়া যায় - ধনিয়াখালি, শান্তিপুরি ও টাঙ্গাইল।

৩। বাটিক প্রিন্ট (Batik Print Saree)


বাটিক অতি প্রাচীন একটি শিল্প। বাটিক হল আসলে শাড়ি রং করার একটি প্রক্রিয়া। বাটিক প্রিন্টের শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবি, শার্ট, ফতুয়া ইত্যাদি দেখতে ভীষণ আকর্ষণীয়, আরামদায়ক ও অতি সুলভেই পাওয়া যায় বলে এটি সহজেই সবার মনে স্থান করে নিয়েছে।

৪। বালুচরী শাড়ি (Baluchari Saree)


মুর্শিদাবাদ জেলার বালুচর নামক স্থানে বালুর চরে বসে এই শাড়ি বোনা হয়েছিল বলে বিক্রয় কেন্দ্রের নামেই এই শাড়ির নাম হয় বালুচরী শাড়ি। লতা পাতা, ফুল দিয়ে নানান নকশা করা বিভিন্ন ধরনের বালুচরী শাড়ি পাওয়া যায়। যেমন - জ্যামিতিক প্যাটার্ন করা, কাশী বালুচরি শাড়ি, মীনাকারি করা বালুচরী শাড়ি, রামধনু বালুচরী শাড়ি ইত্যাদি। বিয়েবাড়ি বা বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানে পরার জন্য এই শাড়ি পারফেক্ট।

৫। ছাপা শাড়ি - (Cotton Chapa Saree)


এই ধরনের শাড়ির আসল চমক এর ছাপায় মানে প্রিন্টে তাই এর নাম ছাপা শাড়ি। এই শাড়ি পড়ার মজাই আলাদা। এই শাড়ি পুরো সুতির এবং বেশ আরামদায়ক হয় তাই এটি বিশেষত ঘরোয়া শাড়ি হিসেবেই ব্যবহৃত হয়।

৬। হ্যান্ডলুম কটন শাড়ি (Handloom Cotton Saree)


হাল আমলে আবিষ্কৃত হ্যান্ডলুম শাড়ি কে ট্র্যাডিশনাল শাড়ি বলা যায় না ঠিকই, কিন্তু আজকাল ফ্যাশান দুনিয়াতে সবার মন জয় করে নিয়েছে এই শাড়ি। ওজনে অনেক হালকা এবং পরনে তুলতুলে নরম বলে আধুনিক যুগে এই শাড়ি প্রত্যেকেরই পছন্দের তালিকাতে এক নম্বরে। বাংলার গ্রামে-গ্রামে এই শাড়ি বোনা হয়। তাঁতিদের জন্য এই শাড়ি বোনা অপেক্ষামূলক ভাবে সহজ বাকি শাড়ির তুলনায় ও কম পরিশ্রমের এবং জনপ্রিয়তা এতটাই বেশি তাই রোজগারও বেশ ভালো হয় এতে।

Comments

Popular posts from this blog

বিয়ে বাড়িতে জমিয়ে আনন্দ করার সেরা গানের লিস্ট

বেনারসি শাড়ির ব্লাউজের ডিজাইন যা দেবে আপনাকে স্টাইলিশ লুক

হবু কনেদের জন্য সেরা রুপোর নুপুরের ডিজাইন